তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শিল্প-সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক আন্দোলন করা দরকার। যে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ছেলেমেয়েরা মাদকাসক্ত হবে না, বিপথে যাবে না। তারা মানবিক, পরিশোধিত ও প্রকৃত মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠবে।
রোববার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের ৬০ বছর ও ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চলচ্চিত্র মানুষ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কেননা সমগ্র শিল্পের সমন্বয়ে তৈরি হয় চলচ্চিত্র। যে চলচ্চিত্রে গান, নাচ, অভিনয়সহ বহু শিল্প অন্তর্ভুক্ত। যার ফলে একজন মানুষ প্রকৃত গুণাবলী সম্পন্ন মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠতে পারে। পাশাপাশি চলচ্চিত্র শিল্প আমাদের সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করে।’
আরও পড়ুন: চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের ‘হীরক’ ও ফেডারেশনের ‘সুবর্ণজয়ন্তী’ উদ্যাপন
দেশ গঠনে চলচ্চিত্র অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চলচ্চিত্র শিল্প এগিয়ে যাবে। চলচ্চিত্র শিল্প এগিয়ে গেকে দেশ এগিয়ে যাবে। আমরা আশা করি আমাদের চলচ্চিত্র বিশ্বমঞ্চে এগিয়ে যাবে। যেখানে চলচ্চিত্র সংসদ নেতৃত্ব দেবে।’
চলচ্চিত্র শিল্প হুমকির মুখে পড়েছে তা বলব না, কিন্তু চলচ্চিত্র শিল্প কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আধুনিকায়নের ফলে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম হওয়ায় চলচ্চিত্র কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। অনেক সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করছি সেই চলচ্চিত্রকে আবার এগিয়ে নিতে। আমরা সিনেপ্লেক্স তৈরি করছি। চলচ্চিত্রের জন্য অনুদান দিচ্ছি।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখনই সময় চলচ্চিত্র নিয়ে, সংস্কৃতি নিয়ে ভাবার। কিন্তু মানুষ এতো ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এখন মানুষের কোনো সময় নেই। মানুষ শুধু ছুটছে। যন্ত্রের ব্যবহারের সাথে সাথে মানুষও যন্ত্র হয়ে পড়েছে। আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, সেখান থেকে চলচ্চিত্র আমাদের রক্ষা করতে পারে। এটি রাজপথের আন্দোলন নয়। এটি মানবিক বিকাশের আন্দোলন। এই আন্দোলনে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তবেই আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প ঘুরে দাঁড়াবে।’
এর আগে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এরপর জনপ্রিয় গানের দল জলের গান সংগীত পরিবেশন করে। এরপর অনুষ্ঠানে দেশের চলচ্চিত্র সংস্কৃতির উৎকর্ষ অর্জনে বিশেষ অবদানের জন্য শতাধিক চলচ্চিত্র সংসদের মধ্য থেকে নির্বাচিত চলচ্চিত্র সংসদসমূহকে ‘ছয় দশকের সেরা চলচ্চিত্র সংসদ সম্মাননা’ দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: একমঞ্চে একসাথে সম্মাননা পেলেন ৬৫ গণমাধ্যমকর্মী
শেষে প্রদর্শিত হয় চলচ্চিত্র সংসদকর্মী নুরুল আলম আতিকের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘লাল মোরগের ঝুঁটি।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক মোরশেদুল ইসলাম, ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশের সভাপতি লাইলুন নাহার স্বেমি ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়াত হোসেন মামুন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় উদ্যাপন পরিষদের সদস্য সচিব বেলায়াত হোসেন মামুন।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বরেণ্য চলচ্চিত্রকার ও জাতীয় উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক মোরশেদুল ইসলাম এবং অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশের সভাপতি স্থপতি লাইলুন নাহার স্বেমি।
Source link